UA-199656512-1
top of page

সনাতন শাস্ত্রে মাংসাহারের প্রতি প্রবৃত্তি নয় নিবৃত্তিই বিধান


ree


সনাতন ধর্ম সার্বজনীন ধর্ম। এই ধর্মে সকলকে স্থান দেওয়া হয়। সকলের উত্তরণের পথ দেখানো হয়। এখানে কাওকে ফেলে দেওয়া হয় না। সকলে স্থান পায় এই সনাতনধর্মের ছায়াতলে। এই ধর্মে শ্রেষ্ঠ কর্ম করার ও শ্রেষ্ঠ পথে চলার যেমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তেমনি কিভাবে ঐ শ্রেষ্ঠ মার্গে উত্তরণ হওয়া যায় তার পথও বর্ণিত আছে। সত্ত্ব, রজ, তম সকলগুণের মানুষের জন্য পন্থা বর্ণিত আছে। কিভাবে মানুষ তমঃ থেকে সত্ত্বে যেতে পারে, এবং সত্ত্ব থেকে ত্রিগুণাতীত পর্যায়ে যেতে পারে সে সম্পর্কেও পথ দেখায় সনাতন ধর্ম।

খাদ্যের ব্যাপারেও সনাতনধর্মে এমন পথ নির্দেশনা দেওয়া আছে। পৃথিবীর সকল মানুষই এক রকম খাদ্য গ্রহন করে না। কেও শাকাহারী কেও বা প্রাণী মাংসাহারী। সনাতন ধর্মের সর্বদাই প্রাণী মাংস আহারকে ত্যাগ করতেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্রেষ্ঠ ধর্মাচরণ হিসেবেও একে তুলে ধরা হয়েছে। মুনি, ঋষি মহাত্মাগণ সর্বদা প্রাণী মাংস না খাওয়ার নির্দেশই দিয়েছেন। মহাত্মা ভীষ্ম, দেবর্ষি নারদ, দেবগুরু বৃহস্পতি, ঋষি মার্কণ্ডেয় সর্বপ্রকারে মাংসাহার থেকে দূরে থাকতেই বলেছেন। আর তপস্বী, সাধু, জ্ঞানী গণের জন্য অবশ্যই মাংসাহার বর্জনীয়।


মহাভারতে ,



ree



ree

ree


ree


ree


তবে সকলের ক্ষেত্রে এই আদেশ মানা সম্ভবও হয় না। মাংসাহারী মানুষেরা মাংসের প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করে বলে মাংসাহার একেবারে ছেড়ে দেওয়া তাদের জন্য কষ্টকর। যেহেতু সনাতন ধর্ম সার্বজনীন ধর্ম তাই সেইসকল মানুষের জন্যও সনাতন ধর্মে ব্যাবস্থা রয়েছে। যজ্ঞাবশিষ্ট রূপে বা দেবোদ্দেশে বলিকৃত পশুর মাংস তথা প্রোক্ষিত মাংস তাদের খাওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে এবং তৎভিন্ন মাংস ভক্ষণকে মহাপাপ বলা হয়েছে।


মহাভারতে,

ree


মনুসংহিতায় ,


ree



তবে এই প্রোক্ষিত মাংসাহারেও অল্প পরিমাণ অল্প পরিমাণ পাপ হয়ে থাকে। তবে তা অবশ্যই অপ্রোক্ষিত মাংস তথা যজ্ঞে নিবেদন ব্যাতীত মাংস খাওয়া অপেক্ষা ভালো। অপ্রোক্ষিত মাংস খেলে মহাপাপ হয়ে থাকে।


মহাভারতে,

ree


ree



বৈদিক যজ্ঞে পশু উৎসর্গের বিধান পাওয়া পাওয়া যায়। বৈদিক যজ্ঞে যে পশু উৎসর্গ করা হয়ে থাকে সেই পশুর উন্নত জীবন লাভ হয়ে থাকে। এজন্য বৈদিক যজ্ঞে পশু বধ করা হলেও তা অহিংস নামে হিসেবে বিবেচিত। ব্রহ্মসূত্রের ৩/১/২৫ এ ইহাই বলা আছে।


ব্রহ্মসূত্রে ,


ree


যজ্ঞে পশু বধ ও মাংসাহারকে এক করে গুলিয়ে ফেলে অনেকে। যজ্ঞে পশু উৎসর্গ করা হয় যজ্ঞ ক্রিয়ার অংশ হিসেবে। যজ্ঞে পশু উৎসর্গ মানেই যে যজ্ঞের পর সেই পশুর মাংস খাওয়া হবে, এটা পুরোপুরি ভুল ধারণা। রামায়ণ ও মহাভারতে দেখা যায় অশ্বমেধ যজ্ঞে অশ্বের মেদ দিয়ে যখন যজ্ঞ কার্য সম্পাদিত হয় তখন সকলে সেই যজ্ঞের ধূমের ঘ্রাণ মাত্র গ্রহন করে। কিন্তু সেই যজ্ঞে প্রদত্ত মাংস কেও খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে নাই।


মহাভারত ,


ree


রামায়ণে,


ree

তবে যজ্ঞের উদ্দেশ্য কখনোই মাংস খাওয়া উচিত নয়। যজ্ঞে পশু উৎসর্গ, যজ্ঞকার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যেই ও পশুর উন্নত জীবন কামনায় হওয়া উচিত, মাংস খাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।
যজ্ঞাবশিষ্ট হিসেবে মাংস খাওয়াটা মূলত মানুষকে মাংসাহার হতে নিবৃত করার জন্যই। মাংসাহারের দিকে উৎসাহিত করার জন্য নয়। যজ্ঞের মাধ্যমে মাংসাহার করাটাও মোটেই প্রশংসনীয় নয়, তাহাও নিন্দনীয়। তবে তা নেই মামার চেয়ে কানা মামার মত অপ্রোক্ষিত মংসাহারের চেয়ে ভালো। যজ্ঞের বা দেবোদ্দেশে পশু বলির অযুহাত দিয়ে যদি মানুষ মাংসাহারে প্রবৃত্ত হয় তাহলে তারা পাপভোগী হয়। কেননা মাংসাহারকে উদ্দেশ্য করে মাংসলোভী হয়ে যদি যজ্ঞ করা হয় তাহলে তা মহাপাপ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং তারজন্য নরকভোগী হতে হয়।


মহাভারত,


ree



শ্রীমদ্ভাগবতের ১১ স্কন্দে ঊদ্ধবগীতায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ঊদ্ধবকে বলছেন-


ree



তাই আমাদের সকলের মাংসাহার থেকে নিবৃত্ত হওয়া উচিত। আর যদি নিবৃত্ত হতে নাই পারি তবে দেবোদ্দেশে বলি দিয়ে সেই বলিকৃত পশুর মাংস গ্রহন করা উচিত। তৎভিন্ন সকল প্রকার প্রাণীজ মাংসাহার বর্জনীয়। মাংসাহারীদের মাংসাহার ত্যাগ করা অতীব পূণ্যের কাজ।


মহাভারতে ,


ree


আর একটা কথা যুক্ত করতে চাচ্ছি, অনেকেই পশুবলির বিরোধিতা করে থাকে। মূলত বলির বিরোধিতা না করে আপাতত বলিহীন মাংসাহারের বিরোধিতা করা উচিত। কেননা এভাবে আয়োজন করে শাস্ত্রীয় নিয়মে ও মাংস খাওয়ার উদ্দেশ্যহীন ভাবে যখন সকলে মাংসাহার করবে তখন তাদের মনে আপনা আপনিই মাংসাহার নিবৃত্তির ভাব জাগবে। মাংস খেলে, সনাতনী হিসেবে অবশ্যই বলি দিয়ে খাওয়া উচিত। নয়তো তা মহাপাপ বলে বিবেচিত। একটাবার মুসলিমদের দিকে তাকান, তারা হারাম মাংস খায় না সাধারণত (বিসমিল্লাহ বলা ব্যাতীত জবাই করা মাংস)। অথচ আমরা সনাতনীরা যদের মাংসাহার বর্জন করা শ্রেষ্ঠ ধর্মের কর্মের একটি, তারা মাংসাহার বর্জন তো দূরের কথা, বরং যবন হোটেলে গিয়ে অপ্রোক্ষিপত ও নিষিদ্ধ (বিসমিল্লাহ বলে জবাই করা) মাংস ইচ্ছা মত খেয়ে যাচ্ছি। একটু বিবেচনা করুন কতোটা নিম্নমানের কাজে প্রবৃত্ত হচ্ছি আমরা।



বন্ধ হোক সকল অপ্রোক্ষিত মাংস ভোজন। পারলে প্রোক্ষিত মাংস হতেও নিবৃত্ত হোন।


 
 
 

Comentarios


Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page