UA-199656512-1
top of page

ইদানীং একশ্রেণীর ধর্মের ইজারাদারদের উৎপত্তি ঘটেছে যাদের চোটে সাধারণ জনগণের ধর্মকর্ম করা দায় হয়ে উঠেছে। ইহাদের ধারনা/বক্তব্য অনেকটা এরকম যে, তাদের নির্ধারিত মত পথের বাইরে ভগবৎপ্রাপ্তির চান্স নেই এবং তাদের নির্ধারিত আচার্যপ্রণীত গ্রন্থ ব্যাতীত আর সকল পণ্ডিত/আচার্য/শাস্ত্রজ্ঞকৃত গ্রন্থ পরিপূর্ণ নয়/যথাযথ নয়, তাদের গোষ্ঠীর বাইরে অপর সাধকপুরুষগণ ও ভ্রান্ত/অসম্পূর্ণ।

সনাতন ধর্ম কি এতটাই সংকীর্ণ? তাহা হইলে ইহার নাম শাশ্বত সনাতন হইত না।


ভারতবর্ষে শত-সহস্র বছর ধরে সহস্রাধিক সাধকগণ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে সিদ্ধ হয়েছেন, ভগবৎপ্রাপ্তি করেছেন। কারো সাধন পন্থা কারো সাথে পুরোপুরি মেলে না, মিলবেও না। কারণ সাধকগণের মনোভাব, আর্ত্তি ও রসের ভিন্নতা। সনাতন শাস্ত্র সাধকগণকে পরস্পরের সাধনপন্থায় শ্রদ্ধান্বিত হবার আদেশ দিয়েছে, নিন্দা নয়।


“ স্ব এব ধর্মে ন পরং ক্ষিপেৎ স্থিতঃ।” (ভা. ৪/৪/১৯)

নিজ নিজ ধর্মনিষ্ঠ ব্যক্তি অপর ব্যক্তির বা অপর ধর্মের কখনো নিন্দা করবে না।


অথচ আজকাল অপর মতপথের নিন্দাই যেন একমাত্র ধর্মাচরণ হয়ে দাড়িয়েছে।

কেউ রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের নিন্দা করছে, অপর কেউ এ.সি. প্রভুপাদের নিন্দা করছে, কেউ অদ্বৈত শঙ্করের নিন্দা করছে, কেউবা বিশুদ্ধাদ্বৈত/ অচিন্ত্য ভেদাভেদের বৈষ্ণবগণের নিন্দা করছে, কেউ জগদ্বন্ধু সুন্দরের নিন্দা করছে, কেউ সিদ্ধপুরুষ লোকনাথ ব্রহ্মচারীর নিন্দা করছে, অপর কেউ স্বামী প্রণবানন্দজীর নিন্দা করছে, কেউ ব্রজবাসী বাবাজীদের নিন্দা করছে, কিছু অর্বাচীন মনস্বী গীতাশাস্ত্রী জগদীশচন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের গীতাভাষ্যকে অসম্পূর্ণ/ভ্রান্ত আখ্যা দিচ্ছে।

মহৎপুরুষ অবমাননা যেন আমাদের কাছে ডালভাত।


স্তজ্জন্ম ধিগ্ যো মহতামহৃদ্যকৃৎ।” (ভা. ৪/৪/২২)

মহৎজনের নিন্দাকারী/অপরাধকারী সেই জন্মে ধিক্।


“তেজীয়সি কৃতাগসি ক্ষেমায় তত্র সা ভূয়ান্ন প্রায়েণ বুভূষতাম্।” (ভা. ৪/৬/৪)

তেজস্বীপুরুষে অপরাধ করিয়া যাহারা বাঁচিতে ইচ্ছা করে, তাহাদের ঐরূপ অপরাধময় জীবনধারনের ইচ্ছা প্রায়ই অমঙ্গলজনক হয়।


আবশ্যক নয় সেই মহৎপুরুষকে বৈষ্ণব হতে হবে/ শাক্ত হতে হবে/শৈব হতে হবে/অদ্বৈত মার্গের হতে হবে।

দুদিন কোনো মতানুসারে এসে দুকলম পুথি পড়েই আমরা ভিন্ন্ মত পথের সাধু-সন্ত, মহাত্মাগণকে নিচু দৃষ্টিতে দেখতে আরম্ভ করি, নিন্দা আরম্ভ করি। নিজেদের ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে মহৎপুরুষগণের আচরন বিচারের ধৃষ্টতা করি।

তদপেক্ষা আক্ষেপ তাদের প্রতি যারা শ্রীমন্মহাপ্রভুর অনুগত হয়েও এরূপ নিন্দাকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। প্রভু কি আমাদের এই শিক্ষা দিয়ে গেলেন ?

“যে আমারে পূজে মোর সেবক লঙ্ঘিয়া।

সে অধম জনে মোরে খণ্ড খণ্ড করে।

তার পূজা মোর গায় অগ্নিহেন পোড়ে।।

যে আমার দাসের সকৃৎ নিন্দা করে।

মোর নাম কল্পতরু সংহারে তাহারে।।

অনন্ত ব্রহ্মাণ্ডে যত সব মোর দাস।

এতেকে যে পর হিংসে সেই যায় নাশ।।

অন্যত্র-

“আব্রহ্ম-স্তম্বাদি সব কৃষ্ণের বৈভব।

নিন্দামাত্র কৃষ্ণরুষ্ট কহে শাস্ত্র সব।।

চারিবেদ পড়িয়াও যদি নিন্দা করে।

জন্ম জন্ম কুম্ভীপাকে ডুবিয়া সে মরে।।”

অন্যত্র-

“সাধুনিন্দা শুনিলে সুকৃতি হয় ক্ষয়।

জন্ম জন্ম অধঃপাত এই বেদে কয়।।

অনিন্দুক হই যে সকৃৎ কৃষ্ণ বলে।

সত্য সত্য কৃষ্ণ তারে উদ্ধারিব হেলে।।” (শ্রীচৈতন্য ভাগবত)


সনাতন সমাজের অভ্যন্তরীণ অনৈক্য, কলহের মূল হচ্ছে এই পরস্পর মতাদর্শের প্রতি অশ্রদ্ধা, অপর সাধকগণের প্রতি হীনভাব, নিন্দাপ্রবণতা।

আমরা যেন কেউ নিজেদের ধর্মের ইজারাদার না ভাবি। অপর মতপথ ও অপর মতপথের সাধকপুরুষদের নিন্দা না করি, নিজেদের অস্পষ্ট ধারনা নিয়ে কোনো সাধক/শাস্ত্রজ্ঞকে অবমাননা না করি।

সাধু সাবধান!!!


ree

 
 
 
Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page