UA-199656512-1
top of page

রাধাভাবে ভোরা গোরা ৷(#পর্ব_০৪) (চলবে)


(#রায়_রামানন্দ_ও_মহাপ্রভু_____সংবাদ!)

#জ্ঞানশূন্যা ভক্তিতে—সেব্য-সেবকত্ব ভাব বা সেবাবাসনা থাকায় মহাপ্রভু রামানন্দকে বললেন—"এহো হয়"

তবু এর পরে কিছু থাকলে তা শুনতে চাইলেন ৷ তখন—

" #রায়_কহে—প্রেমভক্তি সর্ব সাধ্য সার ॥" (চৈ;চ;-২/৮)



#প্রেমভক্তি—প্রেমলক্ষণা ভক্তি ৷ প্রেম বলতে 'কৃষ্ণেন্দ্রিয় প্রীতিবাসনা' বুঝায় ৷ সাধন-ভক্তির অনুষ্ঠান করতে করতে ভগবৎ-কৃপায় চিত্তের মলিনতা দূর হলে সেব্য-সেবকত্ব জ্ঞানের উদয়ে ভক্তের সেবা-বাসনা প্রেমরূপে পরিণত হয় ৷ এই প্রেমরূপ সেবা-বাসনার সঙ্গে যে কৃষ্ণসেবা, তা-ই প্রেমভক্তি ৷

#মহাপ্রভু_বললেন—

প্রেমভক্তি সাধ্যবস্তু ঠিকই, কিন্তু এর পরেও বলবার বা শুনবার বস্তু আছে ৷ তখন—

#রায়_কহে—দাস্যপ্রেম সর্ব সাধ্য সার ॥" (চৈ;চ;)

#দাস্যপ্রেম—'ভগবান সেব্য, আমি তাঁর সেবক; ভগবান প্রভু, আমি তাঁর দাস'- এরূপ ভাবই দাস্যভাব ৷ আর দাস্যভাবজাত যে সেবাবাসনা— তাই দাস্যপ্রেম ৷ #কিন্তু_সকলেই শ্রীকৃষ্ণের দাস হলেও সেবাবাসনা অনুযায়ী দাস্যপ্রেম বিকাশেরও তারতম্য আছে ৷ শান্তভাবের ভক্ত যাঁরা তাঁদের কৃষ্ণের প্রতি নিষ্ঠা আছে, কিন্তু মমতা-বুদ্ধি নেই ৷ তাই শান্তভাব থেকে দাস্যভাব উন্নত ৷

#তাই_মহাপ্রভু_বললেন-

দাস্যপ্রেম সাধ্য ঠিকই ৷ কিন্তু কৃষ্ণের প্রতি মমতাবুদ্ধির আধিক্যহেতু আরও উৎকর্ষ সেবাবাসনার কথা শুনতে চাইলেন মহাপ্রভু ৷

তখন—


#রায়_কহে—সখ্যপ্রেম সর্বসাধ্য সার ॥(চৈ;চ;)

#সখ্যপ্রেম—প্রেমাধিক্যবশত যাঁরা শ্রীকৃষ্ণকে নিজেদের সমান বলে মনে করেন, কোনো মতেই নিজের থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন না, তাঁদের প্রেমকে সখ্য প্রেম বলে ৷ এই প্রেমে শান্তের একনিষ্ঠতা, দাস্যের সেবা আছে ৷

#কিন্তু_দাস্যের_ন্যায় গৌরববুদ্ধি, সম্ভ্রম ও সেবায় সঙ্কোচ নেই ৷ এইজন্য এই প্রেম দাস্য অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ৷

#মহাপ্রভু_সখ্যপ্রেমকে সাধ্য বলে উত্তম বললেন, কিন্তু মমতাবুদ্ধির আধিক্য হেতু আরও প্রেমবৈচিত্রী ও উৎকর্ষময় সেবাবাসনার কথা শুনতে চাইলেন ৷ তখন—

#রায়_কহে—বাৎসল্য প্রেম সর্বসাধ্য সার ॥(চৈ;চ;)

#বাৎসল্য_প্রেম—যাঁরা

নিজেদেরকে শ্রীকৃষ্ণের গুরুস্থানীয় বলে মনে করেন এবং শ্রীকৃষ্ণকে তাঁদের অনুগ্রহের পাত্র বলে মনে করেন, তাঁদের রতিকে বাৎসল্য প্রেম বলে ৷ এই রতিতে সখ্য অপেক্ষাও মমতাধিক্য আছে ; কারণ নন্দ-যশোদাদি শ্রীকৃষ্ণকে তাড়ন, ভর্ৎসন, বন্ধনাদি করেছেন ৷ এতে শান্ত, দাস্য ও সখ্যের নিষ্ঠা, সেবা, সংকোচহীনতা ছাড়াও শ্রীকৃষ্ণকে পাল্য এবং নিজেকে পালক জ্ঞান আছে ৷ এজন্য সখ্য অপেক্ষা বাৎসল্য শ্রেষ্ঠ ৷

#মহাপ্রভু_বললেন—বাৎসল্য প্রেম উত্তম বস্তু, কিন্তু এর চেয়েও কিছু উত্তম থাকলে তা বল ৷ তখন—

#রায়_কহে—কান্তাপ্রেম সর্বসাধ্য সার ॥(চৈ;চ;)

#কান্তাপ্রেম—শ্রীকৃষ্ণকে প্রাণবল্লভ, আর নিজেদেরকে তাঁর কান্তা মনে করে স্বসুখবাসনাশূন্য হয়ে কেবল কৃষ্ণসুখৈক তাৎপর্যময়ী সম্ভোগ-লালসাকে কান্তাপ্রেম বলে ৷ #এখানে_কান্তা বলতে পরকীয়া ভাবাপন্ন ব্রজগোপীদের বুঝাচ্ছে ৷

#কান্তাপ্রেমে শান্তের নিষ্ঠা, দাস্যের সেবা, সখ্যের অসংকোচভাব, বাৎসল্যের লালন ও মমতাধিক্যের সঙ্গে কৃষ্ণের সুখের জন্য নিজাঙ্গ দিয়েও সেবা আছে ; এইজন্য কান্তাপ্রেম শ্রেষ্ঠ ৷

#তাছাড়া বাৎসল্য প্রেম বৃদ্ধি পেয়ে ' অনুরাগ 'পর্যন্ত যেতে পারে, কিন্তু কান্তাপ্রেম ভাব ও মহাভাব পর্যন্ত বর্ধিত হয় ; এইজন্য এইপ্রেম বাৎসল্য অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ ৷ তাই কান্তাপ্রেমই সেবা-বাসনার সর্বাতিশায়ী উৎকর্ষতা প্রাপ্ত হয়েছে ৷


#তটস্থ_হঞা_বিচারিলে_আছে_তরতম ॥ (চৈ;চ;)

#তটস্থ_হঞা_বিচারিলে—

নিরপেক্ষভাবে বিচার করলে বিভিন্ন ভাবের মধ্যে যে তারতম্য আছে, তা বুঝা যায় ৷


*#পরিপূর্ণ_কৃষ্ণপ্রাপ্তি_এই_প্রেমা__হৈতে ৷*

*#এই_প্রেমের_বশ_কৃষ্ণ_কহে____ভাগবতে॥*(চৈ;চ;-২/৮)

*#শান্তের_গুণ_দাস্যে , দাস্যের গুণ সখ্যে , সখ্যের গুণ বাৎসল্যে এবং বাৎসল্যের গুণ মধুরে বর্তমান ৷* এইভাবে শান্তের একটি গুণ, দাস্যের দুটি, সখ্যের তিনটি, বাৎসল্যের চারটি এবং মধুরের পাঁচটি গুণ ৷

অর্থাৎ গুণাধিক্যেও কান্তাপ্রেম সর্বশ্রেষ্ঠ ৷ যে রসে গুণ যত বেশি, সেই রসে স্বাদও তত বেশি ; তাই স্বাদাধিক্যেও কান্তাপ্রেমই সর্বশ্রেষ্ঠ ৷

#আকাশ,বায়ূ, তেজ, জল ও পৃথিবী—এই পাঁচকে পঞ্চভূত বলে ৷ শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস, গন্ধ—এই পাঁচটি পঞ্চভূতের পঞ্চগুণ ৷ এই পৃথিবীতে যেমন শব্দ,স্পর্শ,রূপ,রস আকাশাদির সমস্ত গুণই আছে, উপরন্তু পৃথিবীর বিশেষ গুণ আছে তেমনই কান্তাপ্রেমে শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্যের গুণ তো আছেই, উপরন্তু নিজাঙ্গ দিয়ে সেবাও আছে, তাই কান্তাপ্রেমের সেবাতেই শ্রীকৃষ্ণের পরিপূর্ণ সেবা এবং এই প্রেমেই শ্রীকৃষ্ণ সম্যকরূপে বশীভূত ৷।

 
 
 

রাধাভাবে ভোরা গোরা

(#পোষ্ট_নং_০৩)(চলবে)

^^^^^^^^^^^


#গোদাবরী_নদীতে স্নানের পর রামানন্দ রায়ের নবীন সন্ন্যাসীর সাথে অালাপের সময় মহাপ্রভু তাঁর পরিচয় গোপন করেছিলেন, কিন্তু নবীন সন্ন্যাসীর অাকৃতিতে-প্রকৃতিতে ঈশ্বরের লক্ষণ দেখায় রামানন্দ নবীন সন্ন্যাসীকে ( মহাপ্রভুকে) কিছুদিন বিদ্যানগরে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করিলে মহাপ্রভু সস্মত হলে রামানন্দ রায় মহাপ্রভুর অাসনের জন্য মনোরম একান্ত স্থান ও অন্যান্য সুব্যবস্থা করিলেন ৷ অালাপকালে মহাপ্রভু ঈষৎ হেসে রামানন্দকে বলেছিলেন তোমার মুখে কৃষ্ণকথা শুনিতে মন হয় ৷ এরপর মহাপ্রভুর বিশ্রামান্তে রামানন্দ অাসিলে মহাপ্রভু বারাংবার রামানন্দ হইতে ভক্তির "তত্ত্ব ও ভজন-প্রণালী" জানিবার জন্য বিশেষ অাগ্রহ প্রকাশ করিলে রামানন্দ বলিতে সম্মত হলে—

"#প্রভু_কহে—পড় শ্লোক সাধ্যের নির্ণয় ৷ #রায়_কহে—স্বধর্মাচরণে বিষ্ণুভক্তি হয় ॥"(চৈ;চ;-২/৮/৫৪)

#রামানন্দ_বলতে_শুরু_করলেন

#সাধ্য— " জীবের অভীষ্ট বা কাম্যবস্তুই হল সাধ্য ৷ অার সাধ্যবস্তু পাওয়ার উপায় হল সাধন ৷"

#স্বধর্মাচরণ— "ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র—এই চারটি বর্ণাশ্রমের এবং ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বাণপ্রস্থ ও সন্ন্যাস—এই চারটি চতুরাশ্রমের জন্য শাস্ত্রে যে সমস্ত কর্তব্য-কর্মের উপদেশ অাছে, তার অনুষ্ঠান বা অাচরণই হল তাঁর স্বধর্মাচরণ ৷"

#বিষ্ণুভক্তি—রায় রামানন্দের অালোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে—বিষ্ণুভক্তিই পুরুষার্থ বা সাধ্যবস্তু ; ভগবান বিষ্ণু অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণকে সেবা করাই হল বিষ্ণুভক্তি ৷

#মহাপ্রভু_বললেন—এ অত্যন্ত বাইরের (বাহ্য)কথা ৷ এরপরে যদি কিছু থাকে, তা বল৷ তখন—

#রায়_কহে-কৃষ্ণে কর্মার্পণ সাধ্য সার ॥" (চৈ;চ;)

#কৃষ্ণে_কর্মাপণ—শ্রীকৃষ্ণেতে সমস্ত কর্মের ফল অর্পণ ৷ কর্ম বলতে বেদবিহিত কর্ম এবং শরীরের স্বাভাবিক ধর্মবশত যে সব কর্ম করা হয়, সেই সব কর্মের বলা কথা হয়েছে ৷ #কিন্তু_কৃষ্ণে_কর্মাপণ_সাধ্য_নয়, সাধন মাত্র ; এর সাধ্য হল কর্মবন্ধন থেকে মুক্তি ৷ নিজেকে কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত করার ভাবনা যেখান অাছে সেখানে প্রেম থাকতে পারে না; কাজেই তা বাহ্য ৷

#মহাপ্রভু_বললেন—এটাও বাহ্য অাগে বল ৷ তখন—

#রায়_কহে—স্বধর্মত্যাগ এই সাধ্য সার ৷ (চৈ;চ;)

#স্বধর্ম_ত্যাগ—নিজেকে কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত করার ভাবনা যেখানে অাছে—সেখানে প্রেম থাকতে পারে না ; কাজেই তা বাহ্য ; #তখন_রামানন্দ বললেন "স্বধর্মত্যাগ" অর্থাৎ বর্ণাশ্রম ধর্ম ত্যাগই সাধ্য সার ৷

#কিন্তু_স্বধর্মত্যাগও সাধন মাত্র, এটা সাধন নয় ৷

#তাই_মহাপ্রভু_বললেন—

এটাও নিতান্ত বাইরের কথা ৷ তখন—#রায়_কহে—জ্ঞানমিশ্রা ভক্তি সাধ্য সার ৷ (চৈ;চ;)

#জ্ঞানমিশ্রা_ভক্তি—জ্ঞানের সঙ্গে মিশ্রিতা ভক্তি ৷ জ্ঞানমার্গের সাধনের সঙ্গে মিশ্রিতা যে ভক্তি, তা-ই জ্ঞানমিশ্রা ভক্তি ৷ অাবার যাঁরা ভক্তিমার্গের সাধন করেন,তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন তত্ত্বাদি বিষয়ক জ্ঞানলাভের চেষ্টাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকন ৷ তাই এঁদের ভক্তিকেউ জ্ঞানমিশ্রা ভক্তি বলা যায় ৷

#তবে_রামানন্দ জ্ঞান-শব্দে জীব-ব্রহ্মের ঐক্য জ্ঞানকেই বুঝিয়েছেন বলে মনে হয় ৷

#তাই_এবারও_মহাপ্রভু বললেন—এটাও নিতান্ত বাইরের কথা অাগে বল ৷ তখন—

#রায়_কহে—জ্ঞানশূন্যা ভক্তি সাধ্য সার ৷ (চৈ;চ;)

#জ্ঞানশূন্যাভক্তি—জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কশূন্য ভক্তি ৷

#জ্ঞানের_তিনটি_অঙ্গ—


ভগবত্তত্ত্ব-জ্ঞান , জীবতত্ত্ব_জ্ঞান ,

এবং জীব-ব্রহ্মের ঐক্যজ্ঞান ৷ জ্ঞানমিশ্রা ভক্তির ক্ষেত্রে এই তিনটি অঙ্গের সঙ্গে মিশ্রিতা ভক্তির কথাই বলা হয়েছে ৷

#কিন্তু_ভক্তির_সঙ্গে জীব-ব্রহ্মের ঐক্যজ্ঞান সঠিক নয় বলে মহাপ্রভু জ্ঞানমিশ্রা ভক্তিকে বাহ্য বলেছেন ৷

#তা_শুনে—রামানন্দ জ্ঞানের তিনটি অঙ্গের সংশ্রবশূন্যা বা জ্ঞানশূন্যা ভক্তির কথা বললেন ৷ জ্ঞানমিশ্রা ভক্তি থেকে জ্ঞানশূন্যা ভক্তি উৎকর্ষ ; কারণ এই ভক্তিতে জীব-ব্রহ্মের ঐক্যজ্ঞানের মিশ্রণ নেই ৷

#রায়ের_কথা_শুনে মহাপ্রভু জ্ঞানশূন্যা ভক্তিতে—সেব্য-সেবকত্ব ভাব বা সেবাবাসনা থাকায় বললেন— "এহো হয় " ; তবু এর পরে কিছু থাকলে তা শুনতে চাইলেন ৷

 
 
 

#রাধাভাবে_ভোরা_গোরা ৷"

(#পোষ্ট_নং_০২ )


"#সঞ্চার্য_রামাভিধভক্তমেঘে স্বভক্তিসিদ্ধান্তচয়ামৃতানি ৷ গৌরাব্ধিরেতৈরমুনা বিতীর্ণৈস্তজ্জ্ঞত্বরত্নালয়তাং প্রয়াতি॥" (২/৮/শ্লোক—০১)

"#শ্রীগৌরাঙ্গ_সমুদ্র , অার ভক্ত রায় রামানন্দ যেন মেঘ ৷ সমুদ্র থেকে যেমন মেঘে জল সঞ্চারিত হয়, তেমনি রায়রামানন্দরূপ মেঘে স্বভক্তি সিন্ধান্তরূপ (কৃষ্ণভক্তি) অমৃত সঞ্চারিত হল ৷ রামানন্দের মুখে সেই সিদ্ধান্তরূপ অমৃত বৃষ্টির মতো ঝড়ে পড়ে সমুদ্ররূপ মহাপ্রভুতেই অাবার ফিরে এল ৷ বৃষ্টির জল সমুদ্রে পড়লে রত্ন জন্মে,তখন সমুদ্রের নাম হয় রত্নাকর, তেমনি রামানন্দের মুখনিঃসৃত সিদ্ধান্তের উপলব্ধিগুলো কৃষ্ণভক্তি সিদ্ধান্তের সমুদ্র বা রত্নাকর ৷



#বৈষ্ণব_জগতে_রামানন্দ_রায়

নামটি অতীব আদরণীয়

নাম ! মহাপ্রভু নিজে মনের আনন্দে এই উক্তি করিয়াছেন—

*"'তুমি পাণ্ড-ু পঞ্চপাণ্ডব তোমার নন্দন ॥"'* (চৈ ; চ ; ১/১০/১৩০ )

"' এই পঞ্চপুত্র তোমার-মোর প্রিয় পাত্র ৷ রামানন্দ সহ মোর দেহ মাত্র ভেদ ॥"' (চৈ;চ;১/১০/১৩২ )

#নীলাচলে_মহাপ্রভু রামানন্দের পিতার সঙ্গে মিলনের সময় একথা বলেছিলেন ৷ মহাপ্রভু স্পষ্টাক্ষরেই বলিয়াছেন তাঁহাতে এবং রামানন্দে দেহগত ভাবেই মাত্র পৃথক , তাঁহারা দুইজন অভিন্নাত্মা ৷

#মহাপ্রভুর_এই_উক্তি সত্য সত্যই মহাসত্য তাতে কোন সন্দেহ নাই ৷ মহাপ্রভু অন্তরঙ্গ ভক্তগণের মধ্যে রামানন্দের মুখই "'সাধ্যসাধনতত্ত্ব ও তদ্ ব্যপদেশে রাধাপ্রেমের অপূর্ব মহিমা"' প্রকাশিত করাইয়া পরিশেষে রামানন্দের নিকট নিজের স্বরূপ "'রসরাজ মহাভাব দুইয়ে যে একরূপ"' তাহা প্রকাশের মাধ্যমে স্বীয় অত্যন্ত নিগূঢ় তত্ত্ব ব্যক্ত করেছিলেন ৷

#মহাপ্রভুর অত্যন্ত মরমী পরিকর রামানন্দ রায়ের আরও পরিচয় পরিলক্ষিত হয় ৷ তিনি উড়িষ্যার রাজা প্রতাপরুদ্রের মন্ত্রীরূপে সকল বিষয় কর্মে ব্যাপৃত থাকা সত্ত্বেও রামানন্দ ছিলেন পরমভাগবতপ্রেমিক, পরমপ্রেমিক , পরমপণ্ডিত , ও পরমরসজ্ঞ ভক্ত ৷ শুধু তাই নয় রামানন্দ সুনিপুণ লেখক, সুদক্ষ অভিনেতা , এবং সুদক্ষ বক্তাও ছিলেন , রামানন্দের সংস্কৃতে লেখা "জগন্নাথ বল্লভ" নাটকটি বৈষ্ণব সমাজে অত্যন্ত আদরণীয় ৷

#স্বয়ং_মহাপ্রভুই স্বানুভাবে বলেছেন তা চৈতন্যচরিতামৃতে উল্লেখ আছে—

"রামানন্দ রায় মহাভাগবত- প্রধান ৷ তেঁহো জানাইল-কৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান ॥"



"তাতে প্রেমভক্তি পুরুষার্থ শিরোমণি ৷ রাগমার্গে প্রেমভক্তি সর্বাধিক জানি॥" " (চৈ;চ;-৩/৭/২০—২১ )"

#রামানন্দের_মুখ_নিঃসৃত পরম আস্বাদ্য, পরম লোভনীয়, পরম চিত্তাকর্ষক ভক্তিসিদ্ধান্তরূপ কৃষ্ণকথা শ্রবণে-পঠনে সকলেই , এমনকি স্বয়ং মহাপ্রভুও পরম তৃপ্তিলাভ করিতেন এবং এইকথা শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে ভক্তিমার্গের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠতম মধুরাতিমধুর *"সাধ্যসাধনতত্ত্ব রায় রামানন্দ ও মহাপ্রভু সংবাদ"।*

#দ্বাপরে_ব্রজলীলার

বিশাখাই কলিতে নবদ্বীপ লীলায় কৃষ্ণভক্তিরসের পরিপূর্ণ প্রবাহরূপে রামানন্দরায়ে বিরাজিতা ৷ কৃষ্ণভক্তিরসময়ত্বই তাঁহার প্রকৃত স্বরূপ ৷ রামানন্দকে দর্শন আর কৃষ্ণভক্তিরসঘন মূর্তি দর্শন একই দর্শন ৷ রামানন্দের শ্রীকণ্ঠে কৃষ্ণকথা শ্রবণ আর কৃষ্ণকথামৃত সুধাসিন্ধুতে নিমজ্জন একই কথা ৷ তখনকার দিনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ ভক্তাভক্ত নির্বিশেষে যিনিই একবার রামানন্দের সাথে কৃষ্ণকথা আলাপন করতেন তাঁর হৃদয় কৃষ্ণভক্তিপ্রেমরসে পরিপ্লুত হয়ে উঠত ৷ কারণ;—তাঁহার সুললিত কন্ঠের কৃষ্ণকথা-সুধাসরিৎ শ্রীকৃষ্ণপ্রেম সমুদ্রে নিত্য সংযুক্ত ৷

#মহাপ্রভুর_দাক্ষিণাত্য ভ্রমণের সময় গোদাবরী তীরে প্রথম রামানন্দরায়ের সক্ষাতে যে সাধ্যসাধনতত্ত্ব আলোচনা হয়, যা চৈতন্যচরিতামৃতে উল্লেখ আছে সেই— *"'#রায়_রামানন্দ_ও_মহাপ্রভু__সংবাদ"'*

আলোচনায় একটু সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করব ৷

*"নমস্কার কৈল রায়, প্রভু কৈল আলিঙ্গনে ৷ দুইজনে কথা কহে বসি রহঃস্থানে॥"*(চৈ;চ;-২/৮ )

 
 
 
Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page