UA-199656512-1
top of page

শাস্ত্রবিধি কেন মানিতে হয় ? না মানিলে কি হয় ?

Updated: Sep 17, 2020



ree



শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যনিত্যানন্দচন্দ্রৌ বিজয়েতেতমাম্ ।।

শ্রীধামবৃন্দাবননিবাসীপণ্ডিতশ্রীরঘুনাথদাসেন লিখিতম্ ।।


যত্র ধর্মঃ তত্র বিজয়ঃ


শাস্ত্রবিধি কেন মানিতে হয় ? না মানিলে কি হয় ?

যঃ শাস্ত্রবিধিমুৎসৃজ্য বর্ততে কামকারতঃ ৷ ন স সিদ্ধিমবাপ্নোতি ন সুখং ন পরাং গতি ৷৷ ( গীতা 16:23 )


ভগবান্ গীতায় বলেছেন যে ব্যক্তি বিধি ত্যাগ করিয়া নিজ ইচ্ছামত যে কোন কর্ম করিয়া থাকে অর্থাৎ ধর্ম্মাদি কর্ম্ম করিয়া থাকে তার কখনই সিদ্ধি প্রাপ্তি হয়না তথা সুখ ( ভক্তি আদি পরমা গতি অর্থাৎ ভগবানের চরণলাভ ) কখনই করিতে পারে না ৷


#শংকরাচার্য্য এবং আনন্দগিরি এই শ্লোকের টীকায় বলিতেছেন---

সর্বস্যৈতস্যাঽঽসুরসম্পৎবিবর্জ্জনস্য শ্রেয় আচরণস্য শাস্ত্রং কারণং । শাস্ত্রং প্রমাণাদুভয়ং শক্যং কর্তুং, নান্যথা অতঃ যঃ শাস্ত্রবিধিং শাস্ত্রং বেদঃ তস্য বিধিং কর্তব্যাকর্তব্য জ্ঞানকরণং বিধিপ্রতিষেধাখ্যমুৎসৃজ্য ত্যক্ত্বা বর্ত্ততে কামকারতঃ কামপ্রযুক্তঃ সন্ ন স সিদ্ধি ন পুরুষার্থযোগ্যতামবাপ্নোতি, নাপ্যস্মিন্লোকে সুখং, ন পরাং প্রকৃষ্টাং গতিং স্বর্গং মোক্ষং বা ।



#আনন্দগিরি ----- আসুর্য্যাঃ সম্পদো বর্জ্জনে শ্রেয়সঞ্চ করণে কিং কারণাৎ ? তদাহ- সর্বস্যেতি । তস্য কারণত্বং -- শাস্ত্রেতি উক্তমুপজীব্যানন্তর শ্লোকʼ প্রবর্ত্তয়তি অত ইতি । শিষ্যতেঽনুশিষ্যতে বোধ্যন্তেঽনেনপূর্বোঽর্থ ইতি শাস্ত্রং, তচ্চ বিধিনিষেধাত্মকমিত্যুচ্চতে ব্যাচষ্টে--কর্তব্যেতি । কামস্য কারণ কামকারস্তস্মাদ্ধেতুরিত্যুপেত্য কামাধিনা শাস্ত্রবিমুখস্য প্রবৃত্তিরিত্যাহ । কামাধীনপ্রবৃত্তেঃ সদা পুরুষার্থযোগস্য সর্বপুরুষার্থসিদ্ধিরিত্যাহ -নাপীতি ।


সকলপ্রকারের অসুরাদিমার্গ বিবর্জ্জন করিয়া শাস্ত্রাদি মানিয়া শেষ্ঠ আচরণ করিতে হয় । কোনটি আসুরিক মত এবং কোনটি সঠিক মার্গ ইহাকে জানিবার একমাত্র উপায় হইতেছে শাস্ত্র । শাস্ত্রই একমাত্র প্রমাণ ...


দ্বে ব্রহ্মণী বেদীতব্যে শব্দব্রহ্ম পরং ত যৎ । শব্দব্রহ্মণি নিষ্ণাতঃ পরং ব্রহ্মাধিগচ্ছতি ।। ( মৈত্রায়ণ্যুপনিষদ্ ষষ্ঠঃ প্রপাঠকঃ শ্লোকঃ ২২ )


দুই প্রকারের ব্রহ্ম জানা যাইতেছে একটি শব্দ ব্রহ্ম অন্যটি পরম ব্রহ্ম । যিনি শব্দব্রহ্মে নিষ্ণাত হইয়াছেন তিনিই একমাত্র পরমব্রহ্মকে প্রাপ্ত করিয়া থাকেন ।

ফলিতার্থ যিনি শাস্ত্র বিধিনিষেধকে মানেন তিনিই শাস্ত্রনিষ্ণাত তিনিই পরমব্রহ্মকে লাভ করেন এখানে পরমব্রহ্মবলিতে শ্রীকৃষ্ণকেই বুঝিতে হইবে কারণ শ্রীভক্তিরসামৃতসিন্ধুতে শ্রীরূপগোস্বামী, তদ্ টীকায় জীবগোস্বামী ,মুকুন্দদাসগোস্বামী ও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলিয়াছেন ....


অতঃ শ্রীবৈষ্ণবৈঃ সর্বশ্রুতিস্মৃতিনিদর্শনৈঃ । তদ্ব্রহ্ম শ্রীভগবতো বিভূতিরিতি কীর্ত্ত্যতে ।।

ঐ পরম ব্রহ্মকেই ভগবান বলিয়া জানিবে , ।।


#বিশ্বনাথ চক্রবর্তী---শ্রীবৈষ্ণবৈঃ শ্রীরামনুজাচার্য্যগণৈঃ সর্বশ্রুতিস্মৃতি-শাস্ত্রাণাং নিতরাং দর্শন-কর্ত্তৃভিঃ কীর্ত্ত্যতে ---শ্রীসম্প্রদায়ের শ্রীরামনুজাচার্য্যাদি আচার্য্যগণ সকলেই ব্রহ্ম শব্দকে ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণবলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন ।



#জীবগোস্বামী ----- অত--ইতি যদ্যতৈর্ব্রহ্মশব্দেনাপি ভগবানেব বাচ্যতে,নির্বিশেষং ব্রহ্ম তু পৃথক্ নাঙ্গীক্রিয়তে । অতএব ব্রহ্মশব্দমাত্রই ভগবান বাচ্য বলিয়া জানিবে, নির্বিশেষ ব্রহ্ম বলিয়া পৃথক করিয়া কখনই মানিবে না ।


অর্থাৎ শব্দ প্রমাণই হইল সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণ-- গৌড়ীয়দিগের সমস্তগোস্বামীগণ শব্দ প্রমাণকেই শ্রেষ্ঠ প্রমাণ বলিয়াছেন । শব্দপ্রমাণকে কখনই প্রত্যক্ষ, অনুমানাদি অন্য কোন প্রমাণদ্বারা খণ্ডন করা যায় না অর্থাৎ শাস্ত্রে যাহা নিষিদ্ধ হইয়াছে তাহাকে জগতের কোন দৃষ্টান্ত দ্বারা খন্ডন করা যায় না । যিনি এগুলি করিয়া থাকেন জানিবেন তিনি এখনও শাস্ত্রবিষয়ে অনভিজ্ঞ । শাস্ত্র প্রমাণের দ্বারাই ঐহীক ও পারমার্থিক এই দুই সাধনই করিতে হইবে এর অন্যথা কখনও করিবে না । শাস্ত্রবিধি অর্থাৎ শাস্ত্রই বেদ এবং তার বিধি কর্তব্য ও অকর্তব্যকে জানিয়া বিধি প্রতিষেধ কে মানিতে হইবে যিনি বিধি প্রতিষেধকে ত্যাগ করিয়া অর্থাৎ না মানিয়া কার্যকরে , কাম্যকার্য করে তার কখনই সিদ্ধিলাভ হয় না সে পুরুষার্থকেও লাভ করিতে পারেনা, সে এই লোকেও কাম্য কার্যের দ্বারা সুখ লাভ করিতে পারেনা, সে পরাং গতি অর্থাৎ ভগবানের চরণলাভ তথা দাস্যতা তথা প্রকৃষ্টাং গতি অর্থাৎ উত্তমগতি (ভগবানের চরণলাভ হইতে আর কোন গতিই উত্তম নয় ) লাভ করিতে পারে না ।


#বেদান্তদেশিকাচার্য্য এই শ্লোকের টীকায় বলিতেছেন---

আসুরস্বভাবেষু মূলতয়া প্রধানভূতাস্ত্রয়া উক্তাঃ তেভ্যোঽপি পরিহার্য্যো হেতুরনন্তরমুচ্চত ইত্যাহ শাস্ত্রানাদর-- ইতি । সর্বাবস্থসমস্তপুরুষহিতানুশাসনচ্ছাস্ত্রশব্দো বেদেষ্বেব প্রথমং প্রাপ্তঃ তদনুবন্ধ্যাদন্যেষ্বিত্যেভিপ্রায়েণাঽঽহ শাস্ত্রং বেদা ইতি । বিধায়কবাক্যস্য শস্ত্রশব্দেনোপাত্তত্বাৎ তদ্ব্যাপারোঽত্র বিধিশব্দবিবক্ষিত ইত্যাহ-বিধিরনুশাসনমিতি । ফলিতামাহ- বেদাখ্যাং মদনুশাসনমিতি । শাস্ত্র বিধিরিতি সামানাধিকরণ্যং বা বিবক্ষিতং । মদনুশাসনং ইত্যনেন শ্রুতিঃ স্মৃতির্মমৈবাজ্ঞা ইত্যাদি স্মারণম্ । এতানান্যেথা লিঙ্গাদ্যর্থে বর্ণযত্নেঽপি প্রত্যুক্তাঃ । লিঙ্গাদয়ো হি প্রশাসিতুরভিপ্রায়মাক্ষে পাদভিধানতো বা ব্যঞ্জয়তি । শাস্ত্রপ্রতিপক্ষভূতঃ কামকারোঽত্র ন শাস্ত্রীয়বৈকল্পকাদিবিষয়ে ইত্যাভিপ্রায়েণঽহ সচ্ছন্দানুগুণমার্গেতি । অথ কেন প্রযুক্তোঽয়ম্ ।

শাস্ত্রাদি যাহারা মানেনা তাহারাই অসুর বলিয়া কথিত হইয়াছে অর্থাৎ মদ্বিপরীতঃ যাহারা শাস্ত্রাদির বিপরীত কর্ম্ম করিয়া থাকে তাঁহারাই অসুর সেই সমস্ত অসুরেরা তিন প্রকারের তাহা পূর্ব্বেই উক্ত হইয়াছে সেই সমস্ত আসুরিক মতাদর্শকে ত্যাগ করিবে , প্রশ্ন কেন ত্যাগ করিবে ? কারণ তাহারা শাস্ত্রকে মানেন তথা তাহার অনাদর করিয়া নিজেচ্ছানুযায়ী কার্য্য করিয়া থাকে । সর্বাবস্থাসমস্তপুরুষ সকলের হিতসাধনের জন্য তথা অনুশাসনের জন্য শাস্ত্র নির্মাণ করিয়াছেন এবং এই শব্দ বেদে লক্ষিত হইয়াছে এবং তাহা হইতে সমস্ত শাস্ত্রের উৎপত্তি হইয়াছে তাই শাস্ত্রকেও বেদ তথা বেদের জ্ঞান বলিয়া কথিত হইয়াছে । বিধায়ক বাক্যের শস্ত্র শব্দের উপাত্ত এবং তার ব্যাপার এখানে বিধি শব্দ বিবক্ষিত হইয়াছে অর্থাৎ--- বিধি তথা অনুশাসনই হল শাস্ত্র । ফলিতার্থ-- বেদপুরুশ ভগবানের অনুশাসনই হল শাস্ত্র । শাস্ত্রবিধি ইতি সামানিধিকরণ । মদনুশাসন অর্থাৎ শ্রীভগবানের দ্বারা নির্মিত অনুশাসন অর্থাৎ শ্রুতিস্মৃতিপুরাণাদি আমার আজ্ঞা বলিয়া জানিবে । যে এই সকল আজ্ঞা না মানে সে ঐকান্তিক ভক্ত হইলেও তাঁহার মার্গকে কদাপি অনুসরণ করিবে না …. প্রমাণ


শ্রুতিস্মৃতিপুরাণাণি পাঞ্চরাত্রং বিধিং বিনা ৷ ঐকান্তিক হরির্ভক্তি উৎপাতায় বৈ কল্পতে ৷৷ ( পুরাণ বচন )



শ্রুতি,স্মৃতি,পুরাণ তথা পাঞ্চরাত্র বিধি কে যিনি বা যাহারা স্বীকার করেনা তথা তাঁহার পালন করেনা সে বা তাঁহারা কখনই হরিভক্তি লাভ তথা সিদ্ধি প্রাপ্ত হইতে পারে না ৷ যদি কোন ব্যক্তি এই শ্রুতিস্মৃতিপুরাণাণি পাঞ্চরাত্রাদি শাস্ত্রবিধিকে না মানিয়া ঐকান্তিক হরিভক্তিতেও নিমগ্ন হইয়া থাকে তথা হরিভক্তি করিয়া থাকে তথাপি তাহাকে উৎপাত বলিয়া জানিবে অর্থাৎ সেই উৎপাতীয় মার্গ কখনই অনুসরণ করিবে না বা তাঁহাকে আদর্শ বলিয়া স্বীকার করিবে না এবং তদ্ মার্গের অনুসরন করিয়া হরিভক্তিতে প্রবৃত্ত হইবে না । ৷


#রামানুচার্য্য এই শ্লোকের টীকায় বলিতেছেন---

য শাস্ত্রানদরোঽস্য নরকস্য প্রধানহেতুরিত্যাহ-- শাস্ত্রং বেদাঃ বিধিং অনুশাসনং বেদাখ্যাং মদনুশাসনমুৎসৃজ্য যঃ কামকারতো বর্রতে সচ্ছন্দানুগুণমার্গেণ বর্ততে , ন স সিদ্ধিমবাপ্নোতি ন কামপ্যামুষ্মিকীং সিদ্ধিমবাপ্নোতি ন সুখং ন ঐহীকমপি কিঞ্চিদবাপ্নোতি, ন পরাম্ গতিম্ ।

য ইতি অর্থাৎ যিনি শাস্ত্রের অনাদর করিয়া থাকেন তার গতি নরকই হইয়া থাকে । শাস্ত্রং বেদাঃ, বিধিং অনুশাসনং অর্থাৎ শাস্ত্রই বেদ অর্থাৎ শাস্ত্রই জ্ঞানাদি ভক্তিতত্ত্ব জানিবার সুলভ মার্গ , জীবগোস্বামীপাদও ইহাই সন্দর্ভে লিখিয়াছেন । বিধিং অর্থাৎ শাস্ত্রনির্দেশই হইতেছে অনুশাসন । এখন প্রশ্ন হইতে পারে কার অনুশাসন ? উত্তর মদনুশাসন অর্থাৎ ভগবান নিজেই বলিতেছেন ইহা আমার সৃষ্টিকৃত অনুশাসন , আমার এই অনুশাসন না মানিয়া যিনি সেচ্ছাচার করিয়া অর্থাৎ নিজইচ্ছানুযায়ী কার্য্য করিয়া থাকে তার কার্যসিদ্ধি হইয়া না এবং ইহলোকের কোন কর্ম শাস্ত্র না মানিয়া করিলে তাহাতে সুখ প্রাপ্তি হইয়া থাকে না এবং পরাম্ গতি অর্থাৎ ভগবানের শ্রীচরণ লাভের জন্য ভজনসাধনাদি ক্রিয়া করিয়া থাকেন তার সিদ্ধি লাভ হইয়া থাকেনা অর্থাৎ আমাকে প্রাপ্ত হইতে পারে না ।


#শ্রীবিশ্বনাথ চক্রবর্ত্তীপাদ বলিতেছেন----- আস্তিক্যবত এব শ্রেয় ইত্যাহ--- য ইতি । কামচারতঃ ।।


আস্তিকা এব বিন্দতি সদ্গতিং সন্ত এব তে । নাস্তিকা নরকং যান্তীত্যধ্যায়ার্থো নিরুপিতঃ ।। ইতি সারার্থবর্ষিণ্যাং হর্ষিণ্যাং ভক্তচেতসাম্ । গীতাসু ষোডশোঽধ্যায়ঃ সঙ্গতঃ সঙ্গতঃ সতাম্ ।।


অর্থঃ- আস্তিক্যই একমাত্র শ্রেয় মার্গ অর্থাৎ কল্যাণজনক ফলিতার্থ শাস্ত্রবিধি মানিয়া কাম্যকর্ম করিলে সুখ প্রাপ্তি হয় এবং পারমার্থিক ক্রিয়া করিলে তাহার দ্বারাই ভগবানের চরণলাভ হইয়া থাকে । ইহার জন্য যঃ ইত্যাদি বাক্য বলা হইয়াছে । কামচারতঃ-- অর্থাৎ সেচ্ছাচারিতা , অর্থাৎ নিজের মনমত ভাব তথা মনগড়া সিদ্ধান্তের দ্বারা যে ভজনাদি ক্রিয়া করে তাহার গতি একমাত্র নরক । যিনি আস্তিক তথা শাস্ত্র বিধি নিষেধ মানিয়া চলেন, শাস্ত্রবিরুদ্ধ কথা বলেন না তিনিই হলেন সাধু তাহাকেই সৎপুরুষ,বৈষ্ণব বলিয়া জানিবে এবং ইহারাই সদ্গতি অর্থাৎ শ্রীভগবানের চরণ লাভ করিয়া থাকেন । আর যাহারা শাস্ত্রবিরুদ্ধ কার্য্য করে তথা শাস্ত্রবিধিনিষেধ কে গ্রাহ্য করেন না তাহাদিগকে অসুর বলিয়া জানিবে তাহাদিগের গতি একমাত্র নরকই ।.. ইহাই এই শ্লোকের তাৎপর্য্য ।



#শ্রীবলদেব বিদ্যাভূষণপাদ বলিতেছেন------

কামাদিত্যাগঃ স্বধর্ম্মাদ্বিনা ন ভবেৎ. স্বধর্ম্মশ্চ শাস্ত্রাদ্বিনা ন সিধ্যেদতঃ শাস্ত্রমেবাস্থেয়ং সুধিয়েত্যাহ--য ইতি । কামচারতঃ স্বাচ্ছন্দ্যেন যো বর্ত্ততে--বিহিতমপি ন করোতি , নিষিদ্ধমপি করোতীত্যর্থঃ , স সিদ্ধিং পুমর্থোপায়ভূতাং হৃদিশুদ্ধিং নৈবাপ্নোতি,সুখমুপশমাত্মকং চ পরাং গতিং মুক্তিং কুতো বাপ্নুয়াৎ ।

কামাদিরত্যাগও স্বধর্ম্মাচরণ ভিন্ন হইবে না এবং স্বধর্ম্মাচরণও শাস্ত্রভিন্ন সম্ভব নয় । অতএব শাস্ত্রকেই সুধীবৃন্দ তথা মহৎগণ অবলম্বন করিবেন ইহাই কর্তব্য । নিজের ইচ্ছামত যাহারা চলে এবং বেদ ও স্বধর্ম্ম বিহিত কোন কর্ম্ম করেনা , তথা শাস্ত্রনিষিদ্ধকার্য্য করেনা সেই হৃদয়ের বিশুদ্ধিদায়িকা পরমপুরুষার্থোপায়ভূত সিদ্ধি অর্থাৎ শ্রীভগবানকে লাভ করিতে পারেনা । সেই মনুষ্য শান্তিসুখ অর্থাৎ পরাগতি অর্থাৎ শ্রীভগবানকে লাভ করিতেই পারিবে না ।


#শ্রীধরস্বামীপাদও এরূপই বলিয়াছেন ।

সমস্ত আচার্য্যবর্গেরও ইহাই মত । তাহা হইলে যাঁহারা বৈষ্ণব,সাধু হইয়া শাস্ত্রবিধিকে তথা আচার্যদিগের সিদ্ধান্তকে মানিতে চাহেনা তাহারা কি প্রকৃতই সাধু ? অবশ্যই না তাঁহারা হইল কপট ,কেবল ধর্ম্মের নাম নিয়ে তাহারা ব্যবসায় করিয়া চলিতেছে ।

এছাড়া ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং বলিতেছেন----


জ্ঞাত্বা শাস্ত্রবিধানোক্তং কর্তকর্তুমিহার্হসি ৷


গীতায় ভগবান্ বলেছেন শাস্ত্র বিধিকে মানিয়াই কর্ম ও অকর্ম তথা ধর্মাদি তথা ভজনসাধনাদি করিতে হইবে ৷ অর্থাৎ শাস্ত্রবিধি অনুসারই একমাত্র কার্য্য করিবে ৷


মতয়ো যত্র গচ্ছন্তি তত্রগচ্ছন্তি বানরা: ৷ শাস্ত্রাণি যত্র গচ্ছন্তি তত্র গচ্ছন্তি তে নরা: ৷৷

( শ্রুতিবচন )


যে ব্যক্তি শাস্ত্র বিধিকে না মানিয়ে নিজের ইচ্ছমত অর্থাত্ মনপুত কার্য করে তথা ভজনসাধনাদি করে সে পরজন্মে বানর হইয়া জন্ম গ্রহণ করিয়া থাকে ৷ আর যিনি শাস্ত্রাদি মানিয়ে ভজনসাধনাদি কর্ম করিয়া থাকেন তিনি পুনরায় মনুষ্য জন্ম লাভ করিয়া ভজন করিবার সুযোগ পাইয়া থাকেন ৷

অতএব যারা শাস্ত্রবিধি মানেনা তারা বানর হইয়া জন্মিবে, অর্থাত্ জানিয়া শুনিয়া যদি কেহ বানর হইতে চাহেন তবে আর আমার কিছুই বলার নেই ৷৷


ভগবান্ আরও বলিতেছেন যে,


প্রবৃত্তিং চ নিবৃত্তিং চ জনা ন বিদুরাসুরাঃ ৷


যারা শাস্ত্রাদি কে মানেনা তথা নিজ ইচ্ছামত মন স্থাপন করিয়া থাকে তথা নিজমতানুসার ভজন প্রক্রিয়া বলে থাকে থাকে তাহাকে অসুর বলিয়া জানিব ইহা ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণের বাক্য অতএব বর্তমানে যাহারা শাস্ত্রবিধি কে একদমই গুরুত্ব দিচ্ছেনা তাদের গতি কি হবে এবং তারা কি সেটা ভগবান্ স্পষ্টই করে দিয়েছেন ।

অতএব যে বা যাহারা শাস্ত্রবিধিকে মানেনা বা অস্বীকার করিয়া থাকে তাহারা ভগবানের কথানুসারে অসুর প্রবৃত্তি তথা আসুরিক মতাদর্শী অতএব সেই সমস্ত ব্যক্তিদের বুঝিয়ে কোন লাভ নেই কারণ চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী ।



অতএব কে বা কাহার শাস্ত্রবিধি মানিতেছে আর না মানিতেছে তাহা আপনারাই বিচার করুন , কাহারও নাম উল্লেখ করিয়া বলার প্রয়োজন নাই । বাকি আরও প্রচুর শাস্ত্রসিদ্ধান্ত এ বিষয়ে উল্লেখিত রহিয়াছে কিন্তু তাহা আর উল্লেখ করিলাম না । যাহারা জ্ঞানী তাঁহারা নিশ্চই আমার সংকেত মাত্রেই সমস্তবিষয় বুঝিতে পারিবেন এখানে বিভিন্ন আচার্য্যের টীকা প্রকাশ করা হইয়াছে তাই ইহার দ্বারা বোঝাই যাইতেছে ভগবান্ কি বলিতেছেন । আর যাহাদিগের বুদ্ধিনাশ হইয়াছে তাহাদিগের কথা বলিয়া লাভ নাই কারণ তাহারা নিজমত ভিন্ন স্বয়ং ভগবানের বাক্যকেও মানতে রাজি নন ।ভগবানের বাক্যকেও তাহারা নিজমতানুসারে তথা নিজের মত করিয়া বলিয়া থাকে তথা আচার্য্যের বাক্যও তাহারা স্বীকার করেন না অতএব ইহাদিগের উদ্দেশ্যে একটি বাক্যই বলিব যে ( ভাগবত পড়িয়া কাহারও বুদ্ধিনাশ ) ।

জয় শ্রীমন্মহাপ্রভু ।। জয় শ্রীগোস্বামীপাদবৃন্দ ।। জয় ব্রহ্মমধ্বগৌড়ীয়সম্প্রদায়ের সকলাচার্য্যের ।।

শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যনিত্যনন্দচন্দ্রৌ বিজয়েতেতমাম্ ।। শ্রীধামবৃন্দাবননিবাসীপণ্ডিতশ্রীরঘুনাথদাসেন লিখিতম্ ।।

যত্র ধর্মঃ তত্র বিজয়ঃ

#Copy Paste Not Allowed ...Only

Comments


Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page