UA-199656512-1
top of page

শালগ্রামের চক্র বিচার

শালগ্রামের_চক্র_বিচার©


অনেকেই বলে থাকেন যে সংলগ্ন চক্র অর্থাৎ যার দুটি চক্র পরস্পর জুড়ে আছে,এমন শালগ্রাম অপূজ্য |এই বিষয়ে শাস্ত্রীর নিষেধ বাক্যও কিছু আছে | কিন্তু দেখা যায় যে, শুধুমাত্র দক্ষিণ ভারতেই নয়, বঙ্গদেশেও বহু প্রাচীন ও শতাধিক বর্ষ ধরে পূজিত হচ্ছে এমন অনেক শিলাই সংলগ্ন চক্র |

জেনে রাখা দরকার যে,বদ্ধচক্র,পদ্মচক্র,লগ্নচক্র প্রভৃতি সবই সংলগ্ন চক্রের অন্তর্গত | তবে কি এক্ষেত্রে শাস্ত্র লঙ্ঘিত হচ্ছে !



ree

এবার আসা যাক কিছু শালগ্রাম প্রসঙ্গে


কমঠাকার কূর্ম - নাভিচক্রং তু সংলগ্নং....

লক্ষ্মীবরাহ - চক্রে সংলগ্নে....

বরাহ - চক্রে যস্য সদাম্বজে...

বাসুদেব - শিলালগ্নদ্বিচক্রকঃ...

সঙ্কর্ষণ - চক্রৌ অগ্রসংলগ্নৌ....

নরসিংহ - বদ্ধচক্রস্তদান্তরে...



উপরিউক্ত এই সব শিলাই সংলগ্ন চক্র হয়, এর মধ্যে বিশেষ নরসিংহ শালগ্রাম বাদ দিয়ে সব কয়টি শালগ্রামই গৃহস্থের পূজ্য ও শুভফলদায়ী |


আবার রক্তবর্ণ,সর্পের ন্যায় মুখের আকৃতি যুক্ত,ত্রিকোণ,অর্ধচন্দ্রাকৃতি,অচক্র শিলা পূজনও নিষেধ করা হয়েছে |

আবার শাস্ত্রই রক্তবর্ণ সঙ্কর্ষণ , পদ্মনাভ, সর্পফণা আকৃতির শেষ, ত্রিকোণ আকৃতির ত্রিবিক্রম,অর্ধচন্দ্রাকৃতি হৃষীকেশ,চন্দ্র, অচক্র - বুদ্ধ, কূর্ম, নারায়ণ, যোগেশ প্রভৃতি শালগ্রাম পূজার বিধান করছেন | এরকম আরও বহু দৃষ্টান্ত আছে | এরূপ পরস্পর বিরুদ্ধ শাস্ত্রবাক্য কেন ?



আসলে তাৎপর্য হল, শাস্ত্রে কোন একটি শ্লোক থাকলেই তা নির্বিবাদে মান্য হয়ে যায়না | এরজন্য মীমাংসা দর্শনের বিধি প্রকরণ বিচার্য | অপূর্ব বিধি বিশেষ কোন বিধান কে স্থাপন করে, নিয়ম বিধি তার অপ্রাপ্ত অংশকে পরিপূরণ করে এবং পরিসংখ্যা বিধি একাধিক বিধির মধ্যে কোনটিকে নিবৃত্ত করে আরেকটিকে স্থাপন করে | প্রতিটি বিধিবাক্যই কিন্তু শাস্ত্রবাক্য, কিন্তু একজনের দ্বারা আরেকজন রহিত হয় | এক্ষেত্রেও সেইপ্রকার |



আবার অর্থবাদের দ্বারা কোন একটি বিষয়ের উৎকর্ষ বোঝানোর জন্য শাস্ত্রে বহুরূপ নিষেধবাক্য পাওয়া যায় |

সুন্দর চক্রযুক্ত,সুগোল,স্থিরাসন,শালগ্রামের বিশেষ উৎকর্ষতা বোঝানোর জন্যেও শাস্ত্রে এরূপ নিষেধবাক্য লক্ষিত হয় | যেমন - শ্রীরামকৃষ্ণদেবও বলেছেন "শালগ্রাম গোমুখ হবে ,বেশ চক্র থাকবে, তবে তাতে ঈশ্বরের পূজা হয় |" এর তাৎপর্য কোন একটি লক্ষণের উৎকর্ষতা খ্যাপন, অন্যটিকে নিষেধ করা নয় | কারণ ব্রহ্মপুরাণেরই বচন "শালগ্রামশিলাভূতং কিঞ্চিৎ দোষাবহং নহি",, - শালগ্রামের কোন রূপই পূজায় দোষাবহ হয়না |



শ্রী সনাতন গোস্বামী ওনার রচিত বিখ্যাত "কৃষ্ণলীলাস্তবঃ" গ্রন্থে বলেছেন, শালগ্রাম শিলার বিচার নিষেধ, যেমনই হোক, তা ভক্তি সহকারে পূজা করা উচিত "..যাদৃশী তাদৃশী বাপি ভক্তৈর্ভক্ত্যাভিপূজিতা ||"

তবে কি শ্রীমন্মহাপ্রভু যাকে স্মৃতিশাস্ত্র রচনার জন্য প্রেরণ করেছিলেন,সেই সনাতন গোস্বামী শাস্ত্র সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না !!!



আবার কিছু ব্যক্তি অসদুপায়ে অপরের শালগ্রাম শিলাকে হস্তগত করার জন্যেও এইসব ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে লোকের মনে ভয়ের সৃষ্টি করে থাকে | সুতরাং অর্বাচীন লোকের কথায় কান দেবেন না | যদি শাস্ত্র ঐরূপ শিলা-পূজার সম্পূর্ণ নিষেধই করতেন, তবে সংলগ্ন,রক্তবর্ণ,বদ্ধচক্র, অচক্র প্রভৃতি শিলার পূজার বিধান কখনোই শাস্ত্র দিতেন না |



অবশ্য যার নিজের মনে সংশয় আছে,তিনি ঐরূপ শিলা বরং স্থাপন করবেন না, কারণ, "যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধির্ভবতি তাদৃশী |" কিন্তু কোন শিলার পূজা শুরু করার পরে সংশয়ে পতিত হয়ে পূজা না করা অপরাধ, "সংশয়াত্মা বিনশ্যতি |" আর দয়া করে যিনি ভক্তিমনে পূজা করছেন,তাকে ভুল বুঝিয়ে তার বিশ্বাসে আঘাত করবেন না |


©লেখক © শুভদীপ রায় ৷৷

 
 
 

Comments


Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page