UA-199656512-1
top of page

#বঙ্গে_নবজাগরণের_নায়ক_চৈতন্যদেব ৷ (#পর্ব_চার_পোষ্ট_নং_১৭)


#বঙ্গে_নবজাগরণের_নায়ক_চৈতন্যদেব ৷

(#পর্ব_চার_পোষ্ট_নং_১৭)


#পদাবলী_সাহিত্যের_অমর

কবি জ্ঞানদাস ও গোবিন্দদাস ৷

জ্ঞানদাস ষোড়শ শতাব্দীর কবি, তাঁর বাড়ি বর্ধমান জেলার কাঁদড়ায় ৷ গোবিন্দদাস কবিরাজ ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে জন্মেন,তিনি শ্রীনিবাসের শিষ্য নরোত্তম দাসের সুহৃদ রামচন্দ্র কবিরাজের অনুজ ভ্রাতা ৷ বাঙলা পদকর্তাদের মধ্যে জ্ঞানদাসের স্থান বলতে গেলে চণ্ডীদাসের সঙ্গে, অার ব্রজবুলির কবিদের মধ্যে যেমন গোবিন্দদাসের স্থান বিদ্যাপতির সঙ্গে ৷ চণ্ডীদাসের নামে পদাবলীতে ও বিদ্যাপতির নামে পদাবলীতে অবশ্য তাঁদের অনুকারী নানা পদকর্তার পদ এসে মিশে গিয়েছে, গবেষকরা তা অনেকটা যুক্তি-বিচার দিয়ে পৃথক করে নিচ্ছেন ৷ সেই সত্য গ্রাহ্য করেই বলা যায় বাঙলায় চণ্ডীদাসের নামীয় এই সব পদ(দ্বিজই হোন অার দীনই হোন) এই ষোড়শ শতকের থেকেই রূপ গ্রহণ করেছে, পরে তার সংখ্যা অারও বেড়েছ ৷ বিদ্যাপতির নামীয় পদাবলীও তখন ব্রজবুলীর পদাবলী বলে গ্রাহ্য হয়ে গিয়েছে,পরে তার সংখ্যাও বেড়েছে ৷ কিন্তু এই দুই কবিই তখন বৈষ্ণব পদরীতির অাদর্শস্থল বলে গণ্য ৷ অার এঁদের সেই ধারায়,ভাবে ও ভাষায় যাঁরা বাঙলার শিরোমণি তাঁদের মধ্যে একদিকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানদাস,অন্যদিকে শ্রেষ্ঠ গোবিন্দদাস ৷ যে-সব পদাবলী বাঙালীর গৌরব,তার অধিকাংশই হয় চণ্ডীদাসের বা বিদ্যাপতির ভণিতায়, নয় জ্ঞানদাস বা গোবিন্দদাসের ভণিতায় ৷ জ্ঞানদাস অবশ্য ব্রজবুলিতেও প্রায় একশতর মত পদ রচনা করেছেন, কিন্তু তাঁর উৎকৃষ্ট পদ বাঙলায় ৷ অার গোবিন্দদাসের প্রায় সমস্ত পদই ব্রজবুলিতে রচিত,ছন্দ-ঝঙ্কারে,অনুপ্রাসে,অলঙ্কারে, কবিকর্মের অপূর্ব নিপুণতায় গোবিন্দদাস অতুলনীয় ৷ ভাবগৌরব তাঁর কম নয়; কিন্তু গীতিমাধুর্যই তখন যে কবিদের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে তা বুঝা যায় ৷

#সপ্তদশ_শতকে এই ছন্দ কৃতিত্ব

ক্রমেই বেড়ে চলে, সপ্তদশ শতকেও পদকর্তার অভাব নাই ৷ গোবিন্দদাসকে ছেড়ে দিলে প্রধান উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন হেমলতা দেবীর শিষ্য ছন্দশিল্পী যদুনন্দন দাস ৷ জগদানন্দও কারুকর্মে উল্লেখযোগ্য ৷ অন্যান্য প্রখ্যাত পদকর্তা হলেন শ্রীনিবাস-শিষ্য রাধাবল্লভ দাস(চক্রবর্তী), গোবিন্দদাসের পৌত্র ঘণশ্যাম, শ্রীখণ্ডের রামগোপাল দাস (গোপাল দাস) ৷

#এই_কালের_কবিরা ছিলেন

শ্রীনিবাস-নরোত্তম-শ্যামানন্দের প্রচারে ও প্রতিভায় উদ্বুদ্ধ ৷ অার সেই সময়েই বাঙলার বিচিত্র কীর্তন-পদ্ধতির প্রচলণ হয়, বিভিন্ন ধারা ক্রমশ বিকশিত হয়ে ওঠে;যেমন, গরানহাটী,রেনেটী (রাণীহাটী); মনোহরসাহী, ঝাড়খণ্ডী(মান্দারণী) ৷ বিশেষ একেকটি কেন্দ্রের নাম অনুসারে এই সব কীর্তন-পদ্ধতির নামকরণ হয়েছে ৷

ভক্তিসাধনার জগতে অবশ্য প্রধান গ্রন্থ নরোত্তমদাস ঠাকুরের প্রেমভক্তিচন্দ্রিকা, স্বরূপ-কল্পতরু ৷ নরোত্তমদাস বৈষ্ণব সাহিত্যে এক ভক্তিসিক্ত মাধুরীর অাধার ৷ বৈষ্ণব রসতত্ত্বের গুহ্য-কথাও তিনি অালোচনা করেছেন ৷ তাছাড়া তিনি প্রার্থনা,ভজন ও রাগাত্মিকা পদেরও কবি ৷

শ্রীনিবাস-নরোত্তম-শ্যামানন্দের সময়ের অার এক পরম ভক্ত বৈষ্ণব কবি নৃসিংহবল্লভ মিত্র ঠাকুরে কথা অালোচনা না করলেই নয়, তিনি বর্ধমান জেলার কাঁদরার নিকট রাজুর গ্রামে ১৫৫৬ খ্রীঃ জন্মেন এবং কাঁদরার মঙ্গল ঠাকুরের কাছে দীক্ষা নিয়ে বীরভূমের ময়নাডাল গ্রামে এসে মহাপ্রভুর বিগ্রহ (১৫০০শকাব্দ) প্রতিষ্ঠা করে সেবা-পূজা শুরু করেন ৷ (যে মঙ্গল ঠাকুরের নাম চৈ;চ;-১/১২/৮৬ উল্লেখ অাছে) নৃসিংহবল্লভ তাঁর কাছেই দীক্ষা নেন ৷ নৃসিংহবল্লভ খেতুরীতে নিত্যানন্দ পত্নীর সভাপতিত্বে যে মহাবৈষ্ণব সন্মিলন হয়েছিল সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে তাঁর চৌত্রিশটির মত পদ ও প্রার্থনার গান গৃহীত হয় , তিনি মনোহরসাহী কীর্তন ঘরানার একজন অন্যতম স্রষ্টা, এবং পরবর্তীকালে ময়নাডাল ঘরানার কীর্তন বলে খ্যাত হয় , তাঁর পদগুলির ভনিতা নরসিংহ ও নৃসিংহ বলে উল্লেখিত ৷ নৃসিংহবল্লভ রচিত শ্রীসতীশচন্দ্র রায় সম্পাদিত" শ্রী শ্রীপদকল্পতরু" থেকে:—

"অাকাশ ভরিয়া উঠে জয় জয় ধ্বনি ৷ নাচে শিব ব্রহ্মা ইন্দ্র চন্দ্র দিনমণি ॥ ............................

............................................

অখিল-ব্রহ্মাণ্ড-নাথ নন্দের নন্দন ৷ নরসিংহদেব মাগে চরণে শরণ॥"

এবং—কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শ্রীশচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক সম্পাদিত "পদরত্নাবলী" হতে দুটি পদ;—( সুহিনী )

"নব নীরদ নীল সুঠাম তনী ৷

ঝলমল(করে)মুখ চাঁদ জনু॥

..............................................

...............................................

বিহরে নন্দনন্দন এ ভবনে ৷

পদসেবক দেব নৃসিংহ ভনে॥"

এবং—(ভাটিয়ারী)

"মরি বাছা ছাড় হে বসন ৷

কলসী উলাইয়া তোমরা লইব এখন॥

.............................................................................................

ভুবন মোহিয়া উরে, অাঙ্গুলের নখ বরে, সোনায় বান্ধিয়া খোপা তায় ৷ ধাইয়া যাইতে পিঠে, অধিক অানন্দ উঠে নরসিংহ দাসে গুণ গায়॥"

এবং প্রার্থনা গীতি:-(বড় একতাতালি)

"অারতি কিয়ে জয়শ্রী গৌরগোপাল কি কনক কমল রুচিরানন ঝলক তিলক বর ভাল কি ৷"

শেষাংশ:—

"রূপক ভূপ অনুপ বর লাবণি

উছলত গৌর দয়াল কি

গৌর অঙ্গ পহুঁ নরসিংহ ক্যাগতি ক্যাভয় উয়াযম্ কালকি॥"


#অষ্টাদশ_শতকেও _অবশ্য কয়েকজন সুপ্রসিদ্ধ পদকর্তা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৷ যেমন, চন্দ্রশেখর ও শশিশেখর, রাধামোহন ঠাকুর, নরহরি চক্রবর্তী ৷ উনবিংশ শতকেও পদাবলীতে মুগ্ধ হয়ে মাইকেল কি লেখেন নি, 'ব্রজঙ্গনা কাব্য', অার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এর 'ভানুসিংহের পদাবলী' ? এমন কা, বঙ্কিমচন্দ্রও পদ লিখেছেন ৷ * কান্তু তা সত্ত্বেও 'চৈতন্য-যুগই' ১৫০০-১৭০০ খ্রীঃ হল মোটের উপর বৈষ্ণব-পদাবলীর শ্রেষ্ঠ যুগ ৷

* * * * *

* * *

*

 
 
 

Comments


Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page