UA-199656512-1
top of page

বৈষ্ণবের গোত্র হল অচ্যুত ||শাস্ত্র প্রমাণ||


বর্তমানে কিছু জ্ঞানপাপীদের উদ্ভব ঘটেছে যারা কোন সৎ-সম্প্রদায় ভুক্ত গুরুদেবের নিকট শাস্ত্র অধ্যয়ন করেনি। আর সামান্য কিছু চটি বই পড়ে আর ইউটিউবে ভিডিও দেখে তারা সহস্র বর্ষ প্রাচীন বৈষ্ণব-সিদ্ধান্তের উপর আঙুল তোলে। তারা নিজে জগাখিচুড়ি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে বৈদিক মতের বিরুদ্ধে কথা বলে।


এহেন কিছু জ্ঞানপাপী দাবী করে যে বৈষ্ণবের অচ্যুত গোত্র নাকি অশাস্ত্রীয়। তো এই পোস্টে আমরা দেখাব যে অচ্যুত গোত্র শাস্ত্রীয় নাকি অশাস্ত্রীয়?


শ্রীমদ্ভগবদগীতায় শাস্ত্র প্রমাণকেই সর্বোচ্চ মান্যতা দেয়া হয়েছে। কাজেই আমরা শাস্ত্রের মাধ্যমেই তা নিরূপন করব।


শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে,


সর্বত্রাস্খলিতাদেশঃ সপ্তদ্বিপৈকদন্ডধৃক।

অন্যত্র ব্রাহ্মণকুলাদন্যত্রাচ্যুতগোত্রতঃ।।


পদার্থ

সর্বত্র- সব জায়গায়

অস্খলিত- অপ্রতিহত

আদেশঃ - আজ্ঞা

সপ্ত-দ্বীপ- সপ্তদ্বীপ

এক- এক

দন্ড-ধৃক- দন্ডধারী শাসনকর্তা

অন্যত্র- ব্যাতীত

ব্রাহ্মণ কুলাৎ- ব্রাহ্মণ ও মহাত্মা

অন্যত্র- ব্যাতীত

অচ্যুত গোত্রতঃ - ভগবানের বংশধর


ভাবার্থ

পৃথু মহারাজ সপ্তদ্বীপবতী পৃথিবীর একচ্ছত্র দন্ডমুন্ড বিধাতা সম্রাট ছিলেন। তাহার আজ্ঞা সর্বত্রই অপ্রতিহত ছিল। ঋষি-কুল-ব্রাহ্মণ এবং অচ্যুতগোত্রীয় বৈষ্ণবের উপরই তিনি কোন আধিপত্য বিস্তার করেন নাই। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪।২১।১২)


এই শ্লোকে স্পষ্টভাবে বৈষ্ণবদের অচ্যুত গোত্রীয় বলা হয়েছে। এবার আসি কেন বৈষ্ণবদের অচ্যুত গোত্রীয় বলা হয়।


যখন বৈষ্ণব হন বা কৃষ্ণভক্ত হন তখন তাকে সাধারণ কোন গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচনা করা অনুচিৎ। একজন বৈষ্ণব সর্বদা জড় উপাধির উর্ধ্বে। এপ্রসঙ্গে পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে,


অর্চ্যৈ বিষ্ণৌ শিলাধী-র্গুরুষু নরমতির্বৈষ্ণবে-

বিষ্ণোর্বা বৈষ্ণবানাং কলিমলমথনে পাদতীর্থেঽম্বুবুদ্ধিঃ।

শ্রীবিষ্ণোর্নাম্নি মন্ত্রে সকলকলুষহে শব্দসামান্যবুদ্ধি

বির্ষ্ণৌ সর্বেশ্বরেশে তদিতরসমধীর্যস্য বা নারকী সঃ।।


অর্থাৎ, যে মনে করে মন্দিরে ভগবানের বিগ্রহ কাঠ অথবা পাথরের তৈরি, যে সদগুরুকে একজন সাধারণ মানুষ বলে মনে করে, যে বৈষ্ণবদের কোন বিশেষ জাতি বা ধর্মের অন্তর্ভুক্ত অথবা যে ভগবানের চরণামৃত বা গঙ্গাজলকে সাধারণ জল বলে মনে করে, সে হচ্ছে একজন নারকী।


তো এই শ্লোক থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, বৈষ্ণবকে কোন সাধারণ জাতি, বর্ণের অন্তর্ভূক্ত বলে মনে করা পাপ। এখন দেখা যাক বৈষ্ণবের গোত্র অচ্যুত কেন?


‘চ্যুত’ বা ‘বিচ্যুত’ শব্দের অর্থ হল নিজ অবস্থান থেকে পতিত হওয়া। এখন বৈষ্ণবগণ নিজ সাধনার ফলে যে পদ প্রাপ্ত হন কখনো, কোনও কারণেই সেই পদ থেকে বিচ্যুত হন না। শ্রীমদ্ভাগবত হতে এর সত্যতা প্রতিপন্ন হয়।


বাঢ়মুক্তং ভগবত উত্তমশ্লোকস্য শ্রীমচ্চরণারবিন্দমকরন্দরস আবেশিত-চেতসো ভাগবতপরমহংস দয়িতকথাং কিঞ্চিদন্তরায়বিহিতাং স্বাং শিবতমাং পদবীং ন প্রায়েণ হিন্বন্তি।


শ্রী শুকদেব গোস্বামী বললেন, আপনি যা বলছেন ঠিক। ব্রহ্মাদি মহান ব্যাক্তিরা দিব্য শ্লোকের দ্বারা যার বন্দনা করেন, সেই পরমেশ্বর ভগবানের মহিমা মহাভাগবত এবং মুক্ত পরমহংসদের কাছে অত্যন্ত মনোহর। যিনি ভগবানের শ্রীপাদপদ্মের মকরন্দের প্রতি আসক্ত হয়েছেন, এবং যার চিত্ত সর্বদা তার মহিমায় আবিষ্ট, তিনি কখনও কখনও কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার দ্বারা প্রতিহত হলেও, তিনি যে পরমপদ প্রাপ্ত হয়েছেন তা কখনোই পরিত্যাগ করেন না। (শ্রীমদ্ভাগবত ৫।১।৫)


শ্রীমদ্ভগবদগীতায়ও বলা হয়েছে,


ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা শশ্বচ্ছান্তিং নিগচ্ছতি।

কৌন্তেয় প্রতিজানীহি ন মে ভক্তঃ প্রণশ্যতি।।


তিনি শীঘ্রই ধর্মাত্মায় পরিণত হন এবং নিত্যশান্তি লাভ করেন। হে কৌন্তেয়! তুমি দীপ্ত কন্ঠে ঘোষহণা কর যে, আমার ভক্ত কখনো বিনষ্ট হয় না। (শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৯।৩১)


বৈষ্ণবগণ হলেন পরমভক্ত। তারা সর্বদাই ভগবান শ্রীপাদপদ্মে শরণাগত। কাজেই তাদের কখনোই বিনাশ হয়না বা তারা তাদের পদ থেকে বিচ্যুত হন না। আর একারণেই জগৎপাবন বৈষ্ণবদের অচ্যুত বলা হয়। এটিই শাস্ত্রসিদ্ধান্ত। এরপরেও যদি কেউ বৈষ্ণবের অচ্যুত গোত্রকে অশাস্ত্রীয় বলে তাহলে তাকেই অশাস্ত্রীয় বলে ধরে নিতে হবে।

 
 
 

Comments


Be Inspired
International Mula Gaudiya Sampraday Trust 

Write Us

For Any Assistance Or  Query Please Email Or Call To Us

Imgaudiyas@gmail.com

+918439217878

Vrindavan,Uttar Pradesh, India

  • Facebook
  • Facebook
  • YouTube Social  Icon
  • Whatsapp social icon
  • YouTube Social  Icon
  • Twitter Social Icon
  • instagram social icon
  • Facebook Social Icon

Success! Message received.

bottom of page