ধর্ম্মই শ্রেষ্ঠ , ধার্ম্মিকই শ্রেষ্ঠ, ধর্ম্মই একমাত্র ভগবানকে প্রাপ্ত করাইতে সক্ষম ।।
- চাণক্য পণ্ডিত ।। चाणक्य पण्डित

- Jun 19, 2020
- 2 min read
Updated: Sep 19, 2020

পরম পুরুষ সাধনের মূল ধৰ্ম্ম, সেই ধৰ্ম্মানুষ্ঠান করা কি আমার-আমাদিগের কর্ত্তব্য হয় না? অবশ্যই কর্ত্তব্য হয়, যেহেতুক ধৰ্মই এক পরম মিত্র, যিনি মরণ কালে মানুষের সহানুগামী হয়েন ।
যথা তন্ত্রোক্ত প্রমাণ:--
ন পুত্রোপি সহায়ার্থং পিতামাতা চ গচ্ছ। নাপিপৌত্রো নচ জ্ঞাতি ধর্মস্তিষ্ঠতি কেবলং।৷
মনুষ্য সম্বন্ধে ভয়ঙ্কর নিধন কালের সহায়ার্থ পিতা মাতা পুত্র পৌত্র জ্ঞাতি কেহই অনুগামী হয়েনা, কেবল এক ধৰ্মই জীবের সহানুগমন করেন ।
সুতরাং ধৰ্মই পরম পুরুষার্থ ও পরমসুহৃৎ এবং পবিত্র হইতে পরমপবিত্র, যেহেতু ধর্ম্মানুষ্ঠান করলেই চিত্ত পবিত্র হয়, জগৎ সংসারে তদীশ্বর সমস্ত মিষ্ট দ্রব্য হইতে ধর্মকেই এক পরমমিষ্ট বলিয়াছেন, অর্থাৎ ধৰ্ম্ম জনিত মধুর রসাস্বাদনে যদ্রূপ মনের পরিতৃপ্তি হয়, তদ্রুপ আর কোন রসাস্বাদনে হয় না, অতএব ধর্মই সমস্ত নিৰ্ম্মল অখণ্ড সুখের অদ্বিতীয় এক আকর হয়েন। দেখ, ইহলোকে পরলােকে যে যত সুখ সম্ভোগ করুক, কিন্তু ধর্মকেই তাহার মুল বলিয়া মানিতে হয়, এই ধরণীমণ্ডলে নানা উপাদেয় বস্তু জগদীশ্বর কর্তৃক সৃষ্ট হইয়াছে, তৎ সম্ভোগার্থ ধর্মাবলম্বন করিতে হয়, নচেৎ,তল্লাভের সম্ভাবনা থাকে না, অর্থাৎ হিম শিশির গ্রীষ্ম বা শরদাদিকালে সুদৃশ্য মনোহর নানা বস্তু সন্দর্শনে প্রসঙ্গ চিত্তে আমরা তৎ কর্ম বলিয়া পরমেশ্বরের অনুস্মরণ করি, এবং তচ্চিন্তনে যে অখণ্ড আনন্দকে লাভ করি, তাহারও মূল ধর্ম। অতএব ধর্মের পর আমার-আমাদিগের এমত বন্ধু আর কে আছে? যে অপারণীয় মৃত্যু ভয়ের পারদর্শন করাইয়া অভয় কল্যর্থ পদকে প্রদর্শন করায়। সুতরাং ধর্মকেই আমার-আমাদিগের জীবন স্বরূপ কহিতে হয়। যেহেতু ধর্মনুষ্ঠান পুরুষের জীবিত ও মরণ উভয়কালই বিশুদ্ধ সুখাত্মক হয়। যথা (জীব বা মরণ বা সাধুরিতি) অর্থাৎ সাধু ব্যক্তির জীবন মরণ তুল্য। অচিন্ত্য, নির্বিকার, নিরীহ, নিরঞ্জন, জ্ঞানস্বরূপ, সত্যস্বরূপ, আনন্দস্বরূপ যে ব্ৰহ্ম তাহাকে এক ধৰ্ম্ম দ্বারাই লাভ করা যায়, ঐহিকে ধার্মিক ব্যক্তির কোন ক্লেশ নাই এবং ধৰ্ম্মপ্রভাবে মনুষ্যের কোন উৎপাত জন্ম না।
যথা পুরাণ প্রমাণ--
গৌরেকং পঞ্চ চ ব্যাঘ্রী সিংহী সপ্ত প্রসূয়তে । হিংসকাঃ প্রলয়ং যান্তি ধৰ্ম্মো রক্ষাত ধার্মিকং ৷৷
দেখ, এই পৃথিবীতে গাবী এক পুত্র ব্যাঘ্রী পঞ্চ পুত্র সিংহী সপ্ত পুত্র প্রসব করে কিন্ত হিংসা ধৰ্ম প্ৰভাবে ব্যাঘ্র সিংহেরদের প্রলয় হইয়া ধর্মাবলম্বী গাভীর এক পুত্রেই জগত ব্যপ্তিময় হয়, ফলিতার্থ ধার্মিকের বৃদ্ধি অধাৰ্ম্মিকের বিনাশ হইয়া থাকে।
বিশেষ ব্যাখা:-- ব্যাঘ্র ও সিংহের পাঁচ সাত সন্তান হয় ৷ হিংসক বলিয়া উঁহাদিগের বিনাশ করে এবং তাহার পিতা মাতারও ভক্ষণ করে । নচেৎ এই পৃথিবীতে সিংহ ব্যাঘ্রে পরিপূর্ণ হইত, তদ্রূপ সর্পের অসংখ্য সন্তান জন্মে,কিন্তু তাহার পিতামাতারা তাদের ভক্ষণ করিয়া নিঃশেষ করে ৷ গো জাতিরা ধার্মিক পরহিতৈষী একারণে তাহার বংশে জগৎ পরিপূর্ণ, যদি বল এতদবাক্যের প্রমাণ কি? যেহেতুক এক্ষণে সর্বলোকেই অহারীয় পরোপকারণ বলিয়া গো জাতিকে হিংসা করে ধার্মিক বলিয়া কেহই, দয়া করে না, বিশেষতঃ একালে ম্লেচ্ছমতাবলম্বী হইয়া
প্রায়ই গো হত্যায় নিপুণ হইয়াছে, ইহতে গোজাতির যে প্রলয় নাই কে বলে ? উত্তর, ইহা সত্য, কিন্তু গোজাতি হিংসিত হইয়াও ধৰ্ম্ম-প্রভাবে প্রবৃদ্ধ, দেখ, এই জগৎ ব্যাপ্ত হইয়া গােবৃষেরা নিয়ত জীবের উপকার করিতেছে । অতএব অন্যান্য কর্তৃক হিংসিত হইলেও ধার্ম্মিকের নাশ হয় না, ( ধর্ম রক্ষতি রক্ষত: ধর্মই ধার্মিককে রক্ষা করেন।৷)
সদা নিরন্তর ধর্মের পক্ষেই থাকব, মৃত্যু আসিলেও ভীত নই, মৃত্যু তো বার বার গবে কিন্তু ধর্মের পথে অনড় থাকিয়া ধর্ম করিবার সুযোগ বারা বার মিলিবে না ৷ ভাগবতাদি শাস্ত্র গর্জন করিয়া বলিতেছে #সত্যং পরং ধীমহি---- সত্যের পক্ষে থাকুন, সত্য বলুন, অধর্ম্মের প্রতিবাদ করুন তবেই আপনি একমাত্র পরমপদ লাভ করিতে পারবেন, যিনি অধর্ম দেখিয়ে চুপ করিয় থাকেন, যিনি সত্যের পক্ষ ত্যাগ করিয়া অসত্যের পক্ষ অবলম্বন করেন, যিনি নিন্দাদি ভাবিয়া সত্য বলিতে চাহেন না, যিনি ধর্মকে ত্যাগ করেন, যিনি ধর্মের জন্য নিজ সর্বস্ব ত্যাগ করেন না তার একমাত্র গন্তব্য নরক ৷
#অতএব ধর্মই একমাত্র পালনীয় ৷



Comments